সুগারের মাত্রা কত হলে বুঝবেন ডায়াবেটিস আছে ?


ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষদের জন্য রক্তের গ্লূকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ খুব গুরুত্বপূর্ণ।








সুগারের মাত্রা কত হলে বুঝবেন ডায়াবেটিস আছে ?
সুগারের মাত্রা কত হলে বুঝবেন ডায়াবেটিস আছে ?

আপনার রক্তের গ্লূকোজের নিয়মিতভাবে পরীক্ষা করার (আঙুলে ছিদ্র করে পরীক্ষার মাধ্যমে) মাধ্যমে দেখা যায় যে জীবনযাত্রার পরিবর্তনগুলি কীভাবে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রাকে প্রভাবিত করে এবং আপনাকে আপনার ডায়াবেটিসের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে সাহায্য করে। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত লোকেদের হৃৎপিন্ড, কিডনি ও চোখের রোগ, স্নায়ুর ক্ষতি, স্ট্রোক ও দুর্বল রক্ত সংবহনের মত অনেকগুলি স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
ডায়াবেটিস রোগটি এখন আতঙ্ক হয়ে দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে ৪০ পেরুলেই যে কারো এই রোগে পেয়ে বসতে পারে। তাই নিয়মিত পরীক্ষা করা উচিত।
রক্তে চিনির মাত্রা পরিমাপ করে ডায়াবেটিস শনাক্ত করা যায়। ল্যাবরেটরিতে রক্ত পরীক্ষা করে ও ঘরে বসে গ্লুকোমিটার ব্যবহার করে নির্ণয় করা যায়।



ডায়াবেটিস নেই এমন লোকেদের ক্ষেত্রে রক্তে গ্লূকোজের স্বাভাবিক সীমাগুলি হল: আহারের আগে 3.5 - 5.5 mmol/l এবং আহারের দু'ঘণ্টা পরে 8 mmol/l; রক্ত গ্লূকোজ 'স্বাভাবিকের' যত কাছাকাছি থাকে তত ভাল।




সুগারের মাত্রা কত হলে বুঝবেন ডায়াবেটিস আছে
সুগারের মাত্রা কত হলে বুঝবেন ডায়াবেটিস আছে 




আপনি যদি রাতে স্বাভাবিক খাবার খেয়ে সকালে খালি পেটে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করে রক্তে চিনির মাত্রা ৫.৮ মিলিমোলের চেয়ে কম পান তাহলে ধরে নিতে হবে আপনার একটুও ডায়াবেটিস নেই। কিন্তু যদি চিনির মাত্রা ৫.৮ এর বেশি অথচ ৭.৮ মিলিমোলের কম হয় তাহলে আপনার ডায়াবেটিস হওয়ার বেশ ঝুঁকি আছে। এটাকে বর্ডার লাইন বা মার্জিন পয়েন্ট বলে। তাই এটাকে বর্ডার লাইন ডায়াবেটিস বলে ধরা হয়। এছাড়া রক্তে যদি চিনির মাত্রা ৭.৮ মিলিমোলের বেশি হয়, তবে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত বলে মনে করা যায়। তবে শুধু খালিপেটে পরীক্ষাটিই ডায়াবেটিস নির্ণয়ের জন্য যথেষ্ট নয়। খালিপেটে নির্ণয়ের পর ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ পানিতে গুলে খেয়ে দুই ঘণ্টা পর রক্তে আবার চিনির মাত্রা পরীক্ষা করা দরকার। এ ক্ষেত্রে যদি চিনির মাত্রা ৭.৮ মিলিমোল বা তার থেকে কম হয়, তবে ডায়াবেটিস নেই। যদি ৭.৮ এর বেশি, কিন্তু ১১ মিলিমোল বা তার চেয়ে কম হয়, তবে বর্ডার লাইন ডায়াবেটিস বলে ধরে নেয়া যায়। আর যদি চিনির মাত্রা ১১ মিলিমোলের বেশি হয়, তবে ডায়াবেটিস আক্রান্ত বলে ধরে নিতে হয়। এক্ষেত্র ডাক্তার কে সরাসরিভাবে বলা ভালো হয় ,।










খালি পেটে বা খাবারের আগে রক্তের গ্লুকোজ পরীক্ষা (Fasting Blood Glucose) : এ পরীক্ষাটি সকালে নাস্তার আগে খালি পেটে করতে হয়। এ পরীক্ষাটির স্বাভাবিক মাত্রা ৬.১ মিলি মোল/লিটার বা তার কম হলে আপনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত নন। * খাবারের ২ ঘণ্টা পর রক্তের গ্লুকোজ পরীক্ষা (2 Hour After Breakfast) : এ পরীক্ষাটি নাস্তা খাওয়ার দুই ঘণ্টা পর করতে হয়। এর স্বাভাবিক মাত্রা ১০ মিলি মোল/লিটার বা তার কম হলে আপনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত নন। * যে কোনো সময় রক্তের গ্লুকোজ পরীক্ষা (Random) : এ পরীক্ষাটি দিনের যে কোনো সময় করা যেতে পারে। ওই পরীক্ষাটির স্বাভাবিক মাত্রা ৫.৫ থেকে ১১.১ মিলি মোল/লিটার পর্যন্ত ধরা হয়। * ওরাল গ্লুকোজ টলারেন্স টেস্ট  যাদের খালি পেটে ৬.১ এর বেশি কিন্তু ৭.০ মিলি মোল/লিটারের কম কিংবা দিনের যে কোনো সময় ৫.৫ এর বেশি কিন্তু ১১.১ মিলি মোল/লিটারের কম, তাদের এ পরীক্ষাটি করা খুবই জরুরি। কারণ এ পরীক্ষাটির মাধ্যমে কারও ডায়াবেটিস আছে কি নেই সে ব্যাপারে নিশ্চত হওয়া যাবে। এ পরীক্ষাটির জন্য রোগীকে প্রথমে খালি পেটে রক্ত দিতে হবে। এরপর ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ পানিতে মিশিয়ে খেতে হবে এবং ঠিক দুই ঘণ্টা পর রোগীকে আবার রক্ত দিতে হবে।













 এই দুই ঘণ্টা রোগী অন্য কোনো খাবার খেতে পারবেন না এবং কোনো ধরনের শারীরিক পরিশ্রমের কাজও করতে পারবেন না। ধূমপান করা যাবে না। এ পরীক্ষায় যে রোগীর খালি পেটে ৭.০ মিলি মোল/লিটারের চেয়ে বেশি এবং দুই ঘণ্টা পর ১১.১ মিলি মোল/লিটারের চেয়ে বেশি হলে তাকে নিশ্চিত ডায়াবেটিসের রোগী হিসেবে চিহ্নিত করা যাবে। নিয়ম হলো একজন সুস্থ-সবল মানুষ প্রতি বছর একবার করে তার রক্তের গ্লুকোজের মাত্রাটি জেনে নেবেন। এতে তিনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত কিনা তা জানতে পারবেন। অনেকে রয়েছেন, তারা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেশি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন; কিন্তু জানেনই না তিনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। আর এ রকমটি হলে এটি যে কোনো সময় আপনার জীবনের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাই আজই যে কোনো ডায়াবেটিস সেন্টারে গিয়ে আপনার রক্তের গ্লুকোজের সঠিক মাত্রাটি জেনে নিন ও সুস্থ দেহে নিরাপদ থাকুন।


Comments

  1. ডায়াবেটিস নিয়ে বিশেষ করে ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল সে সংক্রান্ত খুবই বিশ্বাসযোগ্য ধারনা পেলাম

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

কিভাবে খুব দ্রুত ১০ কেজি ওজন কমাবেন।

শরীরের ওজন কমানোর উপায় বা ওজন কমাতে আদার ভূমিকা